বৃহস্পতিবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট

বৃহস্পতিবার, EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা অব্যাহত ছিল, যা এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলমান ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের পর দেখা গেছে, যা মূলত ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্পর্কিত ঘটনাগুলোর দ্বারা চালিত হয়েছিল। মার্কেটের ট্রেডাররা আপাতত ডলারের বিক্রয়ে বিরতি নিয়েছে, তবে এটি কতদিন স্থায়ী হবে তা অনিশ্চিত। সম্প্রতি, ট্রেডাররা কেবল শুল্ক সংক্রান্ত বিষয়ে মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করেছে এবং অন্যান্য সমস্ত খবর উপেক্ষা করেছে। এমনকি যখন ট্রাম্প নিজেই তার শুল্ক বাতিল বা স্থগিত করেন, তখনও ডলার শক্তিশালী হয় না। ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, আমরা মনে করি যে মার্কেটের ট্রেডাররা সম্ভবত আগেভাগেই ডলারের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। মাত্র এক সপ্তাহেরও বেশি সময়ে 600-পিপসের দরপতন অতিরিক্ত বলে মনে হচ্ছে, যা একটি কারেকশনের সম্ভাবনা নির্দেশ করে। পাশাপাশি, দৈনিক এবং মাসিক উভয় টাইমফ্রেমেই এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বজায় রয়েছে, যদিও সাম্প্রতিক সময়ে একটি উল্লেখযোগ্য ঊর্ধ্বমুখী কারেকশন দেখা গেছে। গতকাল প্রকাশিত সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের ফলাফল দুর্বল ছিল এবং এটি এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টের উপর কোনো প্রভাব ফেলেনি।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫-মিনিট টাইমফ্রেমে, বৃহস্পতিবার বেশ কয়েকটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল, তবে এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট বেশ অনিয়মিত এবং দুর্বল ছিল। মার্কেটের ট্রেডাররা ডলার ক্রয়ের ব্যাপারে খুব একটা আগ্রহ দেখায়নি, যার ফলে নিম্নমুখী প্রবণতা অনিশ্চিত মনে হয়েছে। 1.0888–1.0896 জোনের কাছাকাছি গঠিত প্রথম সেল সিগন্যালটি বেশ লাভজনক ছিল, তবে 1.0845–1.0851 জোনের কাছাকাছি গঠিত দ্বিতীয় সিগন্যালটি ভুল প্রমাণিত হয়েছে। তৃতীয় ও চতুর্থ সিগন্যালও সঠিক ছিল না।
শুক্রবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, মধ্যমেয়াদে EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে, তবে এটি দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা কমছে। যেহেতু মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এখনো ইউরোর তুলনায় মার্কিন ডলারকে বেশি সমর্থন করছে, আমরা আরও দরপতনের প্রত্যাশা করছি। তবে, ডোনাল্ড ট্রাম্প নিয়মিত বিভিন্ন পদক্ষেপ ও বিবৃতি দিয়ে ডলারকে নিম্নমুখী করছেন। বর্তমানে, মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির চেয়ে রাজনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বেশি প্রভাব বিস্তার করছে।
শুক্রবার, ইউরোর মূল্য যেকোনো দিকেই যেতে পারে, কারণ বর্তমানে মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক কারণগুলোর এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টের উপর খুব বেশি প্রভাব নেই। ট্রাম্প কখন কী ঘোষণা দেবেন তা অনুমান করা অসম্ভব।
৫-মিনিট টাইমফ্রেমে গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো: 1.0433–1.0451, 1.0526, 1.0596, 1.0678, 1.0726–1.0733, 1.0797–1.0804, 1.0845–1.0851, 1.0888–1.0896, 1.0940–1.0952, 1.1011, 1.1048। শুক্রবার, জার্মানি ফেব্রুয়ারির ভোক্তা মূল্য সূচকের দ্বিতীয় অনুমান প্রকাশ করা হবে, অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রে মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভোক্তা মনোভাব সূচক প্রকাশ করা হবে। উভয় প্রতিবেদনই গুরুত্বের দিকে গৌণ হিসেবে বিবেচিত হয়।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শুন পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।