সোমবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট
সোমবার, ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত রাখার প্রচেষ্টা পরিলক্ষিত হয়েছিল, তবে পরে মূল্য নিম্নমুখী হয়ে যায় এবং শেষ পর্যন্ত মূল্য আগের সপ্তাহের শেষ দুই দিনের মতো সাইডওয়েজ রেঞ্জের মধ্যে রয়ে গেছে। বর্তমানে এই পেয়ারের মূল্য স্থানীয় পর্যায়ে সর্বোচ্চ লেভেলের কাছাকাছি স্থিতিশীল হয়েছে। মার্কেটের ট্রেডাররা সম্ভবত ট্রাম্পের নতুন কোনো ঘোষণা, মার্কিন মূল্যস্ফীতি প্রতিবেদন, বা অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্টের জন্য অপেক্ষা করছে। ট্রাম্পের শুল্ক সংক্রান্ত সিদ্ধান্তগুলোর প্রভাব মার্কিন অর্থনীতিতে পুরোপুরি প্রতিফলিত হয়েছে, তবে এখন ইউরো ও পাউন্ডের আরও দর বৃদ্ধির চালিকা শক্তি কী হবে?
গত সপ্তাহে আমরা উল্লেখ করেছিলাম যে, ট্রাম্পের নীতিমালা মার্কিন অর্থনীতির জন্য চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করলেও, দেশটির অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এখনো ইউরোপীয় বা ব্রিটিশ অর্থনীতির তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী অবস্থায় রয়েছে। যদি ট্রাম্প ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা যুক্তরাজ্যের উপর শুল্ক আরোপ করেন, তাহলে তাদের অর্থনীতিও বাণিজ্য যুদ্ধের চাপে মন্থর হয়ে পড়বে। এটি ভাবা ভুল হবে যে শুধুমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পাশাপাশি, মার্কিন ডলার এখনো বিশ্বের রিজার্ভ কারেন্সি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে, ফলে এটি অনির্দিষ্টকালের জন্য দুর্বল হয়ে যাবে—এমনটি মনে করার যথেষ্ট কারণ নেই।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫-মিনিটের চার্টে সোমবার বেশ কিছু ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল, তবে অধিকাংশ সিগন্যালই দুর্বল ছিল কারণ মার্কেটে সাইডওয়েজ মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হয়েছে। 1.2913 লেভেলের কাছাকাছি প্রথম দুটি সিগন্যাল ভুল প্রমাণিত হয়েছে, কারণ এই পেয়ারের মূল্য নিকটবর্তী টার্গেট লেভেলে পৌঁছায়নি। তবে, এই ট্রেডগুলো থেকে বড় ধরনের ক্ষতি হয়নি, কারণ মূল্য উল্টোদিকে যাওয়ার আগে সিগন্যাল অনুযায়ী অন্তত ২০ পিপস সঠিক দিকেই মুভমেন্ট প্রদর্শন করেছিল।
মঙ্গলবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, স্বল্পমেয়াদে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা শুরু হতে পারে, তবে ট্রাম্পের বিভিন্ন পদক্ষেপ এটি প্রতিরোধ করছে। মধ্যমেয়াদে, আমরা এখনো 1.1800 লেভেলের দিকে পাউন্ডের দরপতনের সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি, কারণ এটিই সবচেয়ে যৌক্তিক ফলাফল বলে মনে হচ্ছে। তবে, দৈনিক টাইমফ্রেমে ঊর্ধ্বমুখী কারেকশন শেষ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে এবং এটি কখন এবং কীভাবে শেষ হবে তা পর্যবেক্ষণ করা জরুরি। পাশাপাশি, এটিও গুরুত্বপূর্ণ যে, ডলারের মূল্যের ১৬ বছরব্যাপী চলা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার সমাপ্তি ঘটার ঝুঁকি রয়েছে।
মঙ্গলবার, যদি ডোনাল্ড ট্রাম্প তার নীতিমালার মাধ্যমে বিশ্ববাজারকে আরও অস্থিতিশীল করে তোলেন, তাহলে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে। তবে, যদি ট্রাম্প উল্লেখযোগ্য কোনো ঘোষণা না দেন, তাহলে সবচেয়ে সম্ভাব্য পরিস্থিতি হিসেবে এই পেয়ারের মূল্যের করেকশন হতে পারে।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে গুরুত্বপূর্ণ ট্রেডিং লেভেলগুলো হলো: 1.2301, 1.2372-1.2387, 1.2445, 1.2502-1.2508, 1.2547, 1.2613, 1.2680-1.2685, 1.2723, 1.2791-1.2798, 1.2848-1.2860, 1.2913, 1.2980-1.2993, এবং 1.3043। মঙ্গলবার যুক্তরাজ্য বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট নির্ধারিত নেই, তবে ট্রাম্প এখনও সক্রিয় রয়েছেন। JOLTs থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদন হয়তো মার্কেটে সামান্য প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে, তবে এটি বড় কোনো প্রভাব ফেলবে বলে মনে হচ্ছে না।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শুন পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত কৌশল হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।