সোমবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
সোমবার, EUR/USD কারেন্সি পেয়ার 1.0804 থেকে 1.0888 রেঞ্জের মধ্যে ট্রেড করেছে। মার্কেট বর্তমানে সাময়িকভাবে স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে, যা গত সপ্তাহে তীব্র মূল্য বৃদ্ধির পর পরিলক্ষিত হচ্ছে। সেই সময়ে, ইউরোর মূল্য প্রায় 500 পিপস বৃদ্ধি পেয়েছিল, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা। তবে, এখন ট্রেডারদের সামনে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন রয়েছে: তারা কি মার্কিন ডলার বিক্রি করা চালিয়ে যাবে, নাকি পুনরায় ক্রয় করা শুরু করবে? যদিও ট্রাম্পের আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলোর প্রভাব ইতোমধ্যে মূল্যায়িত হয়েছে, ভবিষ্যতে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। মার্কিন ডলার শুল্ক আরোপের কারণে সম্ভাব্যভাবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সংকোচনের প্রত্যাশায় দুর্বল হয়েছে, তবে প্রকৃত সংকোচন হয়তো খুব কম বা একেবারেই নাও হতে পারে। মার্কেটের ট্রেডাররা ইতোমধ্যে ডলারের ক্ষেত্রে নেতিবাচক সংবাদগুলোর ওপর শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, তাই একই গতিতে ডলারের এই দরপতন অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা কম। এই পর্যায়ে এই পেয়ারের মূল্যের করেকশনই যৌক্তিক সম্ভাবনা বলে মনে হচ্ছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫-মিনিটের চার্টে সোমবার একাধিক ট্রেডিং সিগন্যাল তৈরি হয়েছিল। প্রথম দুটি সিগন্যাল বেশ কার্যকর ছিল, যেখানে মূল্য 1.0845-1.0851 এরিয়া থেকে রিবাউন্ড করে নিকটবর্তী লক্ষ্যমাত্রা 1.0797-1.0804 পর্যন্ত পৌঁছেছে। এই নির্দিষ্ট জোন থেকে বাউন্স করার ফলে ট্রেডাররা লং পজিশন ওপেন করতে সক্ষম হয়, যেখানে মূল্য নিকটতম টার্গেট লেভেলে পৌঁছেছে। তবে, এর পরের সময়টায় মার্কেট বেশ অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে। প্রথম দুটি ট্রেড লাভজনকভাবে ক্লোজ করা গেলেও, পরবর্তী সিগন্যালগুলো মূলত লোকসানের দিকে ধাবিত করেছে।
মঙ্গলবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, এখনও মধ্যমেয়াদে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে। মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখনো ইউরোর তুলনায় মার্কিন ডলারের পক্ষে বেশি কাজ করছে, তাই এই পেয়ারের আরও দরপতনের সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা মূলত ইউরোকে শক্তিশালী হতে দেখছি না; বরং ডোনাল্ড ট্রাম্পের গৃহীত নীতির কারণে ডলারের দুর্বলতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই পেয়ারের মূল্য বৃদ্ধির জন্য আর কোনো দৃশ্যমান কারণ নেই, এবং এই একটি কারণই ডলারের মূল্যকে অনির্দিষ্টকাল ধরে নিম্নমুখী রাখতে পারবে না।
মঙ্গলবার, ইউরোর মূল্য যেকোনো দিকেই মুভমেন্ট প্রদর্শন করতে পারে, কারণ বর্তমানে মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টে খুব বেশি প্রভাব ফেলছে না। এই পেয়ারের মূল্যের দিকনির্দেশনা মূলত ট্রাম্পের নতুন ঘোষণা এবং টেকনিক্যাল বিশ্লেষণের উপর নির্ভর করবে।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণযোগ্য লেভেলগুলো হলো: 1.0334-1.0359, 1.0433-1.0451, 1.0526, 1.0596, 1.0678, 1.0726-1.0733, 1.0797-1.0804, 1.0845-1.0851, 1.0888-1.0896, এবং 1.0940-1.0952। মঙ্গলবারের একমাত্র উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রতিবেদন হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের JOLTs থেকে প্রকাশিতব্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি সংক্রান্ত প্রতিবেদন, যা দুই মাস আগের নিয়োগের তথ্য প্রতিফলিত করে। এটি খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন নয়। যদি ট্রাম্প আজ নতুন করে কোন শুল্ক ঘোষণা না করেন, তাহলে সম্ভাব্যভাবে এই পেয়ারের মূল্যের কারেকশন হতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শুন পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।