শুক্রবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বৃহস্পতিবার স্বল্প বিরতির পর শুক্রবার পুনরায় EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয়েছে। মৌলিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করলে মনে হতে পারে যে ইউরোর এই মূল্য বৃদ্ধি সম্পূর্ণ যুক্তিযুক্ত। ইউরোজোনের জিডিপি প্রতিবেদনের ফলাফল প্রত্যাশার চেয়ে ইতিবাচক ছিল, মার্কিন নন-ফার্ম পে-রোল (NFP) প্রতিবেদনের ফলাফল প্রত্যাশার তুলনায় দুর্বল ছিল, বেকারত্বের হার অপ্রত্যাশিতভাবে বৃদ্ধি পেয়ে 4.1%-এ পৌঁছেছে। তবে, ৫-মিনিটের টাইমফ্রেম বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায় যে ইউরোর মূল্যের বেশিরভাগ বৃদ্ধি দিনের প্রথমার্ধেই ঘটেছে, যা জিডিপি প্রতিবেদনের প্রকাশের আগেই সম্পন্ন হয়েছিল। দিনের দ্বিতীয়ার্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের দুর্বল ফলাফল প্রকাশের পরেও EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকেনি। এটি নির্দেশ করে যে মার্কেটের ট্রেডাররা মৌলিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের ফলাফলের প্রভাব ছাড়াই ইউরো কেনার দিকে ঝুঁকেছিল। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এই পেয়ারের মূল্য 1.0888–1.0896 রেঞ্জের ওপরে উঠতে ব্যর্থ হয়েছে, ফলে গত সপ্তাহে এই পেয়ারের মূল্য মোট মাত্র 460 পিপস বৃদ্ধি পেয়েছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে শুক্রবার, বেশ কয়েকটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। সবচেয়ে শক্তিশালী সিগন্যালটি এশিয়ান সেশনে 1.0797–1.0804 রেঞ্জের ব্রেকআউটের মাধ্যমে গঠিত হয়েছিল। বাকি দিনজুড়ে এই পেয়ার 1.0845–1.0888 রেঞ্জের মধ্যে ট্রেড করেছে এবং মূল্য একাধিকবার এই লেভেলগুলো টেস্ট করেছে। যদিও বেশিরভাগ ট্রেডিং সিগন্যাল লাভজনক ছিল, তবে মূল্য সংকীর্ণ রেঞ্জে থাকা কারণে প্রতিটি ট্রেড থেকে মুনাফার পরিমাণ সীমিত ছিল।
সোমবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে এখনও মধ্যমেয়াদে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতায় বিরাজ করছে। মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মার্কিন ডলারের পক্ষে বেশি কাজ করছে, তাই EUR/USD পেয়ারের আরও দরপতনের সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে ইউরোর মূল্যের সত্যিকারের বৃদ্ধি নয় বরং ডলারের দুর্বলতাই বেশি দৃশ্যমান, যা ডোনাল্ড ট্রাম্পের গৃহীত নীতির কারণে হয়েছে।EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার জন্য অন্য কোনো দৃশ্যমান কারণ নেই।
সোমবার, ইউরো যেকোনো দিকেই ট্রেড করতে পারে, কারণ বর্তমানে মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টে খুব বেশি প্রভাব ফেলছে না। যদি কেউ মনে করে যে ইউরোর মূল্য আর বাড়তে পারবে না, সেটি সম্পূর্ণ সঠিক নয়।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণযোগ্য লেভেলগুলো হচ্ছে: 1.0334–1.0359, 1.0433–1.0451, 1.0526, 1.0596, 1.0678, 1.0726–1.0733, 1.0797–1.0804, 1.0845–1.0851, 1.0888–1.0896, 1.0940–1.0952। সোমবার ইউরোজোন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে খুব বেশি সংখ্যক সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না। তবে, যেসব প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে সেগুলোর ফলাফল মার্কেটে খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে না। উইকেন্ডে ট্রাম্প আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিবৃতি দিয়ে থাকতে পারেন, যার ফলে সোমবারে মার্কেটে "মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন" স্লোগানের প্রভাব পড়তে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শুন পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।