বুধবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বুধবার, কোনো বিরতি ছাড়াই EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত ছিল। প্রকৃতপক্ষে, সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করার প্রয়োজন নেই, কারণ এটি মার্কিন ডলারের বর্তমান দরপতনের ব্যাখ্যা দিতে পারছে না। আমরা সোমবার উল্লেখ করেছি যে, সাম্প্রতিক প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোর ফলাফল ইউরোর মূল্যের এই শক্তিশালী বৃদ্ধির কারণ হতে পারে না। মঙ্গলবার ও বুধবারের পরিস্থিতিও একই ছিল। মাত্র তিন দিনে ডলারের মূল্য ৪০০ পিপস হ্রাস পেয়েছে, এবং প্রশ্ন উঠছে যে এই দরপতনের কারণ কী? এটি কি ব্যবসায়িক কার্যক্রম সূচকের ফলাফলের কারণে হয়েছে? আশ্চর্যের বিষয় হল, গতকাল প্রকাশিত মার্কিন ISM থেকে প্রকাশিত পরিষেবা খাতের PMI প্রতিবেদনের ফলাফল প্রত্যাশার তুলনায় ইতিবাচক ফলাফল।
অতএব, ডলারের বর্তমান দরপতনের একটি মাত্র কারণই বিবেচনা করা যেতে পারে, সেটি হচ্ছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্য। মার্কেটের ট্রেডাররা তার ধারাবাহিক শুল্ক আরোপ, হুমকি, চরমপত্র এবং বিভিন্ন প্রতিপক্ষের প্রতি অবমাননাকর মন্তব্যের প্রতি তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে। এই মুহূর্তে, ট্রেডারদের মধ্যে মার্কিন ডলারের ট্রেডিংয়ে অনীহা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
বুধবার, ৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে বেশ কয়েকটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছে। প্রথমে, এই কারেন্সি পেয়ারের মূল্য 1.0678 লেভেল ব্রেক করে উপরের দিকে যায় এবং তারপর উক্ত লেভেলের ওপর থেকে রিবাউন্ড করে। এরপর, মূল্য 1.0726 থেকে 1.0733 রেঞ্জ ব্রেক করে। ফলে, নতুন ট্রেডাররা অন্তত তিনটি বাই ট্রেড ওপেন করতে পারতেন, যার মধ্যে দুটি লাভজনক হওয়ার সম্ভাবনা ছিল।
বৃহস্পতিবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, মধ্যমেয়াদে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বজায় রয়েছে। বর্তমান মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মার্কিন ডলারের পক্ষে বেশি অনুকূল, যার ফলে আমরা আরও দরপতনের প্রত্যাশা করছি। তবে মূল নিম্নমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু হওয়ার আগে ঘণ্টাভিত্তিক চার্টে কয়েকবার স্বল্পমেয়াদী প্রবণতা দেখা যেতে পারে। বর্তমানে, ইউরোর মূল্য বাড়ছে না, বরং ডলার দুর্বল হচ্ছে, যা মূলত ডোনাল্ড ট্রাম্পের কার্যকলাপের প্রতিফলন ঘটাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার, ইউরোর মূল্য যেকোনো দিকে ওঠানামা করতে পারে, তবে এটির মূল্য বৃদ্ধির সম্ভাবনাই বেশি। বর্তমানে সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মার্কেটে খুব বেশি প্রভাব ফেলছে না, এবং ট্রাম্প কখন কী বলবেন, তা কেউ অনুমান করতে পারছে না।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে পর্যবেক্ষণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো 1.0156, 1.0221, 1.0269-1.0277, 1.0334-1.0359, 1.0433-1.0451, 1.0526, 1.0596, 1.0678, 1.0726-1.0733, 1.0797-1.0804, এবং 1.0845-1.0851। বৃহস্পতিবার, ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (ECB) বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে, এবং ৯৯% সম্ভাবনা রয়েছে যে এই বৈঠকে সুদের হার কমানো হবে। তবে কেউ কি প্রত্যাশা করছে যে ইউরোর দর বৃদ্ধি থেমে যাবে? এই পেয়ারের মূল্যের সামান্য কারেকশন দেখা যেতে পারে, তবে শেষ পর্যন্ত, ডোনাল্ড ট্রাম্পই মার্কেটের মুভমেন্ট নির্ধারণ করবেন।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শুন পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।