বুধবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
মঙ্গলবার EUR/USD পেয়ারের মূল্য উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং রাতভর ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত ছিল। কিন্তু কেন ইউরোর মূল্য বৃদ্ধি পেল? গতকাল মার্কিন মূল্যস্ফীতি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। বেশিরভাগ ট্রেডার আশা করেছিলেন যে দেশটির মূল্যস্ফীতি সামান্য হ্রাস পাবে বা অপরিবর্তিত থাকবে, বিশেষত যেহেতু জেরোম পাওয়েল বারবার উল্লেখ করেছিলেন যে মুদ্রাস্ফীতি হ্রাসের প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। তবে, এই পূর্বাভাসের বিপরীতে, মার্কিন মূল্যস্ফীতি টানা চতুর্থবারের মতো বৃদ্ধি পেয়েছে।
এই ফলাফল সাধারণত মার্কিন ডলারের শক্তিশালী বৃদ্ধির কারণ হওয়া উচিত ছিল, কারণ ২০২৫ সালে ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা এখন প্রায় শূন্যের কাছাকাছি পৌঁছেছে। তবে, ডলারের মূল্য বৃদ্ধি স্বল্পস্থায়ী ছিল। এর কারণ হচ্ছে দৈনিক টাইমফ্রেমে চলমান ঊর্ধ্বমুখী কারেকশন, যা নিয়ে আগেও আলোচনা করা হয়েছে। যদিও ৯০% কারণ মার্কিন ডলারের আরও শক্তিশালী হওয়ার দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছে, মার্কেটে এখনো কারেকশন সম্পন্ন হয়নি বা এই পেয়ারের মূল্যের নতুন নিম্নমুখী মুভমেন্ট শুরু হয়নি। ফলে, আমরা ইউরোর মূল্য বৃদ্ধি পেতে দেখেছি, যেখানে মূলত দরপতনের প্রত্যাশা করা হচ্ছিল।
এছাড়া, এই ঊর্ধ্বমুখী কারেকশন আরও কয়েক সপ্তাহ ধরে চলতে পারে, এবং ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে এটি এখনো পরস্পরবিরোধী প্রবণতা হিসেবে পরিলক্ষিত হচ্ছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
বুধবার ৫-মিনিট টাইমফ্রেমে দুটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল, তবে উভয় সিগন্যালই সহজেই উপেক্ষা করা যেতে পারত। যখন মূল্য 1.0334-1.0359 এরিয়ার নিচে কনসোলিডেট করেছিল তখন প্রথম সিগন্যালটি গঠিত হয়েছিল, তবে এটি মূল্যস্ফীতি প্রতিবেদন প্রকাশের ঠিক পরেই ঘটেছিল, ফলে সময়মতো মার্কেটে এন্ট্রি করা কঠিন ছিল। একই এরিয়ার উপরে কনসোলিডেশনের ফলে দ্বিতীয় সিগন্যালটি গঠিত, তবে যখন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনের ফলাফল এই পেয়ারের দরপতনের সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিচ্ছিল, তখন লং পজিশন ওপেন করা যুক্তিসঙ্গত ছিল না।
বৃহস্পতিবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, বর্তমানে মধ্যমেয়াদে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে। যদিও স্থানীয় পর্যায়ে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা কিছু সময়ের জন্য বাধাগ্রস্ত হয়েছিল, তবে তা পুনরায় শুরু হয়েছে। যেহেতু মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখনো মার্কিন ডলারের পক্ষে কাজ করছে, তাই ইউরোর দরপতনের সম্ভাবনাই বেশি। তবে, দৈনিক টাইমফ্রেমে দেখা যাচ্ছে যে এই পেয়ারের মূল্যের বর্তমান ঊর্ধ্বমুখী কারেকশন আরও কয়েক সপ্তাহ ধরে চলতে পারে।
বৃহস্পতিবার, মার্কেটে এখনো এই পেয়ারের মূল্যের অনিয়ন্ত্রিত মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে, কারণ কারেকশন পর্যায় এখনো শেষ হয়নি। যদিও টেকনিক্যাল লেভেলের উপর ভিত্তি করে ট্রেডিং করা সম্ভব, তবে অত্যন্ত সতর্কতার সাথে ট্রেডিং করা উচিত।
৫-মিনিট টাইমফ্রেমে, ট্রেডিংয়ের জন্য পর্যবেক্ষণযোগ্য লেভেলগুলো হলো: 1.0156, 1.0221, 1.0269-1.0277, 1.0334-1.0359, 1.0433-1.0451, 1.0526, 1.0596, 1.0678, 1.0726-1.0733, 1.0797-1.0804, এবং 1.0845-1.0851।
বৃহস্পতিবার, ইউরোজোনে শিল্প উৎপাদন সম্পর্কিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, পাশাপাশি জার্মানির মূল্যস্ফীতির দ্বিতীয় অনুমান প্রকাশিত হবে; তবে, এই দুটি প্রতিবেদনের প্রভাবে মার্কেটে উল্লেখযোগ্য প্রতিক্রিয়া সৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। অন্যদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেকার ভাতা আবেদন সংক্রান্ত প্রতিবেদন এবং উৎপাদক মূল্য সূচক (PPI) প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, যা মার্কেটে আরও কম প্রভাব ফেলবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (বাউন্স বা লেভেলের ব্রেকথ্রু)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন খোলা হয় (যা টেক প্রফিট শুরু করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ফলস সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যালের গঠন নাও হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) কাছাকাছি লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে যাওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।